মৌলিক ধারণা – সাম্যের বিভিন্ন রূপ ব্যাখ্যা কর?
সাম্যের বিভিন্ন রূপ ব্যাখ্যা কর? -মৌলিক ধারণা
বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে সাম্যের ভিন্নতার আলোচনা করেছেন। ল্যাস্কি -এর মতে সাম্যের দুটি রূপ। যথা – রাজনৈতিক সাম্য ও অর্থনৈতিক সাম্য। সাম্য একটি বহুমাত্রিক ধারণা স্বাভাবতই এর বিভিন্ন রূপ।
স্বাভাবিক সাম্য
এই সাম্যের বক্তারা উল্লেখ করেন মানুষ জন্মগতভাবেই স্বাধীন ও সমান অধিকারের প্রাপক। এরূপ সাম্যের কথা যারা উল্লেখ করেন তাদের মধ্যে প্রাচীন গ্রীসের স্টোইক দার্শনিকগণ, রোমান চিন্তাবিদ সিসেরো, পলিবিয়াস প্রমুখসহ আরো পরে খ্রিষ্টান ধর্মযাজক এবং রুশো প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
সামাজিক সাম্য
ব্যক্তি মানুষের মধ্যে সামাজিক ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য না থাকাই সামাজিক সাম্য। সামাজিক সাম্য হিসেবে বলা হয় যখন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বংশ মর্যাদা, অর্থ, প্রভাব প্রভৃতির ভিত্তিতে মানুষে মানুষে তফাৎ করা হয় না।
আইনগত সাম্য
কোনো দেশের আইন যখন নাগরিকদের মধ্যে ভেদাভেদের বিলোপ ঘটায় তখন তাকে আইনগত সাম্য বলা হয়। আইনের সাম্য বলতে আইনের দৃষ্টিতে সাম্য ও আইনের কর্তৃত্ব সমভাবে সংরক্ষিত হওয়ার অধিকারকে বোঝায়।
রাজনৈতিক সাম্য
সরকার গঠন ও পরিচালনায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, অর্থ, প্রভাব নির্বিশেষে সকলে সমান অধিকার ভোগ করে তখন রাজনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
অর্থনৈতিক সাম্য
ব্যক্তি মালিকানায় বিশ্বাসী এরূপ পুঁজিবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসীরা বলেন অর্থনৈতিক সাম্য হল আয় ও সম্পত্তির অধিকারের সমতা। কিন্তু রাষ্ট্রীয় মালিকানায় বিশ্বাসী বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের মতাদর্শের লেখকরা বলেন অর্থনৈতিক সাম্য ব্যাতীত সকল সাম্য অর্থহীন।
আন্তর্জাতিক সাম্য
আন্তর্জাতিক সাম্য বলতে বোঝায় সাম্যের নীতিকে আন্তর্জাতিক স্তরে বাস্তবায়িত করা। ক্ষুদ্র, বৃহৎ, শক্তিধর বা শক্তিহীন নির্বশেষে সকল রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমান সুযোগ ভোগ করবে।